বরিশালের ৩ সহস্রাধিক মাদকাশক্ত কে সুস্থ্য জীবনে ফেরানো হলিকেয়ার পুড়ছে অদৃশ্য অনলে

স্টাফ রিপোর্টার : মাদকের কড়াল গ্রাসে নিমজ্জিত দক্ষিণবঙ্গের যুব সমাজকে সুস্থ্য জীবনে ফিরিয়ে দিতে ১৫বছর আগে বরিশালে স্থাপিত হয়েছিল একমাত্র মাদক নিরাময় কেন্দ্র হলিকেয়ার। এ অঞ্চরের প্রায় ৩ হাজারের বেশী মাদকাশক্ত যুবক হলিকেয়ারে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য জীবনে আলোর পথে ফিরেছেন।
নেশাগ্রস্থ হয়ে পিতামাতকে মারধর ঘরের আসবাপত্র ভাংচুর করায় অসহায় পিতামাতা বাধ্য হয়ে থানা পুলিশ ও আদলতে সন্তানদের বিরুদ্ধে মামলা করার একাধীক নজির রয়েছে। বরিশালে মাদাকাশক্ত নিরাময় চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র স্থাপিত হওয়ার পরে ঐ সমস্ত নেশাগ্রস্থদেরকে পরিবারের সদস্যরা হলিকেয়ারে ভর্তি করে চিকিৎসার মাধ্যমে সন্তানদেরকে সুস্থ্য জীবনে ফিরিয়েছেন।সুস্থ্য হওয়া রোগীদের মধ্যে তরুন সমাজ, পেশাজীবি ব্যাক্তি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন। বরিশালে হলিকেয়ার থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য জীবনে ফেরা বেশ কয়েকজনে বর্তমানে মাদকাশক্ত নিরায়ম কেন্দ্র দিয়েছেন। তাদের মধ্যে গনমাধ্যম কর্মীও রয়েছেন। ফলে বর্তমানে চিকিৎসা সেবায় প্রতিযোগীতার পাশাপাশি প্রতিহিংশার অনলও রয়েছে। এই প্রতিহিংশার অনলে সেবাদানকারী কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বরিশালবাসী।
খোজ নিয়ে জানাযায়, বাংলাদেশে দুই শতাধীক মাদকাশক্ত নিরাময় কেন্দ্র চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে দেশের নেশাগ্রস্থ যুবসমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করছেন। বরিশালে বর্তমানে ৬টি মাদকাশক্ত নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে। বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকার মাদক ছোবলে নিমজ্জিত শত শত যুবক কে হলিকেয়ারে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্য জীবনে ফিরিয়ে ছিলেন। এছাড়াও বরিশাল মেট্রো পলিটন পুলিশ এবং সহস্রাধিক পরিবারের সহয়তায় হাজার হাজার মাদকাশক্ত যুবক হলিকেয়ারে চিকিৎসা নিয়েছেন। পক্ষকাল পূর্বেও বরিশালের আগৈলঝাড়ার বাসিন্দা মানসিক বিকারগ্রস্থ মাদকাশক্ত যুবক চন্দন সরকারকে চিকিৎার জন্য হলিকেয়ারে ভর্তি করে তার পরিবার। এর কয়েক বছর আগেও চন্দন সরকার হলিকেয়ারে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছে। ২৬ আগষ্ট রাতে সকলের চোখ ফাকি দিয়ে টয়লেটের মধ্যে আত্মহত্যা করে চন্দন সরকার। ইতো পূর্বে গ্রামের বাড়িতে একাধীকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছেন মৃত চন্দন সরকারের স্বজনরা। বরিশাল হলিকেয়ার থেকে কোতয়ালী থানা পুলিশ চন্দনের লাশ উদ্ধার করে শেবাচিম মর্গে প্রেরন করেছেন। এ ঘটনায় একটি অপ মৃত্যু মামলা হয়েছে। মামলার প্রাথমিক সুরাতাহাল প্রতিবেদনে এটি আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পুলিশসহ একাধীক আইন শৃঙ্খলা বাহীনির সদস্যরা পরির্দশন করেছেন। আত্মহত্যার ঘটনার পরে প্রতিপক্ষের আচরনের মতো কয়েকটি গনমাধ্যমে হত্যা উল্লেখ করে সংবাদ প্রচারিত হয়। প্রায় ১৫ বছর সেবা দিয়ে আসা হলিকেয়ার মাদকাশক্ত নিরাময় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ সহ নানান প্রচার অপপ্রচার হওয়ায় এই প্রতিষ্টানের কর্নদার মোস্তাফিজুর সুমন বেজায় কষ্টের কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বরিশালের প্রথম মাদকাশক্তদের চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র করে হাজার হাজার মাদকাশক্তদের সেবা দিয়ে সুস্থ্য জীবনে ফিরিয়ে কলঙ্কের ভাগ নিতে হলো। কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে আইন ব্যবস্থা নেবে। তাতে সর্বাত্ত¡ক সহযোগীতা থাকবে। কিন্তু অপরাধ প্রমানিত হওয়ার আগেই কাউকে অপরাধী বানিয়ে প্রচার করা হলে মাদকাশক্ত নিরাময় কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোন গতি থাকে না। বরিশালের বিভিন্ন পেশা ও শ্রেনীর মানুষ বলছেন, সেবামুলক এই প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রতি সকলের সহানুভুতি ও সহমর্মিতা থাকা দরকার। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সাড়া দেশে নেশাগ্রস্ত মানুষদেরকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্য জীবনে ফেরানোর একমাত্র পন্থা।