দাম বেড়েছে আটা-ডাল-সবজির

  বিশেষ প্রতিনিধি    04-11-2022    161
দাম বেড়েছে আটা-ডাল-সবজির

সরবরাহে সংকট না থাকলেও রাজধানীর খুচরা বাজারে বেড়েছে চাল, ডাল, সয়াবিন তেল ও আটার দাম। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি চিনি ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মুদি দোকানি মো. বোরহান বলেন, কোম্পানি থেকে চিনির সরবরাহ নেই। যে কারণে পাইকারি বিক্রেতারা চিনি পাচ্ছে না। ফলে আমাদের মতো খুচরা বিক্রেতারা চিনি না পেয়ে বিক্রি বন্ধ রেখেছে।

যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারের রোমান রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা মো. রিয়াত হোসেন বলেন, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৬৬-৮০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ৬৩-৭৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

খুচরা বিক্রেতারা বলেন, সাত দিন আগে প্রতি কেজি খোলা আটা ৫৮ টাকা বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্যাকেট আটা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬৪ টাকা। যা দুই দিন আগেও ৬২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আটা বিক্রেতা কবির বলেন, হঠাৎ করেই বাড়লো আটার দাম।

বাজারে দেশি মসুরের ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে মসুরের ডালের কেজি ছিল ১৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০ টাকা। লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকায়। খোলা সয়াবিন তেল ১৫৮ টাকা কেজিতে বিক্রির কথা থাকলেও ৭-৮ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা, যা সাত দিন আগে ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. আবির বলেন, বাজারে এমন কোনো পণ্য পাওয়া যাবে না যার দাম কম। প্রতি বছর এ সময় পেঁয়াজের দাম বাড়ে। এবার বিক্রেতারা দাম বাড়িয়েছে।

বাজারে সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা দাম বেড়েছে। আকারভেদে পাতাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। শসা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮৫ টাকায়। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯০ টাকা। গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা কেজি। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা। শিমের কেজি ৯০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা ৮০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০ টাকা, লাউ প্রতিটি আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৮০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০-৪৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৬৫, পটল ৬০-৭০, ঢেঁড়স ৭০-৮০, কচুর লতি ৭৫-৮০, পেঁপে ৪০-৪৫, বরবটি ৭০-৮০ ও ধুন্দুল ৬৫-৭০ টাকা কেজি। কাঁচামরিচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯৫ টাকায়। এছাড়া কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১০-২০ টাকা।

সবজি বিক্রেতা মো. নিরব বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কম। সরবরাহ বাড়লে সবজির দাম কমে যাবে।

বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩৫ টাকায়। রসুনের কেজি ৬০-৮৫ টাকা। বাজারে চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা। আদা ১২০-১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে আগের দামে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। ফার্মের লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০টাকা। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৯৫-২০০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২২০-২২৫ টাকা।

বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৮০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকায়।

বাজারে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি। ব্রয়লার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০-৩০০ টাকায়।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক খুচরা পণ্যমূল্য তালিকা অনযায়ী, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি মাঝারি আকারের চাল ১.৮৫ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে সরু চাল বিক্রি হয়েছে ১.৪৫ শতাংশ বেশিতে। পাশাপাশি প্রতি কেজি আটার দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ২.৫০ শতাংশ। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল শূন্য দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি মসুর ডাল কিনতে ক্রেতার ১.৫০ শতাংশ বেশি দাম গুণতে হচ্ছে। এছাড়া সাত দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে ৯.৫২ শতাংশ।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, নিত্যপণ্যের বাজার তদারকি আরও জোরদার করা হবে। পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। অনিয়ম পেলেই আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে।

অর্থ-বাণিজ্য-এর আরও খবর