বীর মুক্তিযোদ্ধারা মানবেতর জীবনযাপন করবেন- এটা হতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

  বিশেষ প্রতিনিধি    16-02-2023    185
বীর মুক্তিযোদ্ধারা মানবেতর জীবনযাপন করবেন- এটা হতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা মানবেতর জীবনযাপন করবেন না। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিক্ষা করবেন বা রিকশা চালাবেন- আমি জাতির পিতার কন্যা থাকতে এটা কখনো হতে পারে না।

বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর ও নড়াইলে অসচ্ছল প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ৫ হাজার ‘বীর নিবাস’-এর চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ প্রজন্মের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। সারাদেশের অনাবিষ্কৃত বধ্যভূমিগুলো খুঁজে বের করে সংরক্ষণ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার ব্যবস্থা করেছে। এখন তা ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঘর-বাড়ি তৈরি, জীবন-জীবিকা, চিকিৎসা-যাতায়াতসহ নানা সুবিধার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আজ ‘বীর নিবাস’ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। সব বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্যই এ বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ৫ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার মাঝে বীর নিবাস হস্তান্তর করা হচ্ছে। বর্তমানে ১৭ হাজার ৬৬০টি বীর নিবাসের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে চলমান রয়েছে। এ বছরের মধ্যে ৩০ হাজার বীর নিবাস নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।

সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য সম্মানের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। ১৯৭১ সালে যারা জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে আমাদের বিজয় এনে দিয়েছেন, তাদেরকে সম্মান দেখানো আমাদের কর্তব্য। মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী বিদেশি বন্ধু এবং মিত্র শক্তির সদস্যদেরও আমরা সম্মান দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা মারা গেলে যেন রাষ্ট্রীয় সম্মান পান সেই ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা যেন বংশ পরম্পরায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পান সেই ব্যবস্থাও করেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনলাইনে ভাতা দেওয়া ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের জন্য ম্যানেজমন্টে ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) নামে পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ গড়ে তুলেছি। এটি জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজের সঙ্গে যুক্ত।

মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় স্মৃতি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এরই মধ্যে প্রায় ২০ হাজার সমাধিস্থল সংরক্ষণ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। ২৯৩টি উপজেলার ৩৬০টি স্থানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ বা জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় আলাদা মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্স করা হচ্ছে। এতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মানুষ জানতে পারবে এ যুদ্ধ আমাদের জন্য কত গৌরবের ছিল, কাদের আত্মত্যাগে এ সম্মান পাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে ‘বীর নিবাস’ এর ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। দুটি শয়নকক্ষ, একটি বসার ঘর, একটি রান্নাঘর এবং একটি করিডোরসহ একতলা-বিশিষ্ট প্রতিটি ‘বীর নিবাস’ ১৪ দশমিক ১০ লাখ টাকায় নির্মিত এবং দেশের জাতীয় পতাকার রঙ লাল-সবুজে করা। এছাড়া রান্নাঘরের পাশে একটি সিমেন্টের উঠান, একটি নলকূপ, একটি বাথরুম এবং গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির শেড রয়েছে।

জাতীয়-এর আরও খবর