রোহিঙ্গাদের পেছনে এনজিওগুলোর ব্যয় কত, হিসাব চাওয়া হবে

  বিশেষ প্রতিনিধি    19-02-2023    226
রোহিঙ্গাদের পেছনে এনজিওগুলোর ব্যয় কত, হিসাব চাওয়া হবে

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, অভিযোগ আছে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও উগ্রবাদিদের অর্থায়ন করে। এজন্য রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও’র ব্যয়ের হিসাব চাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন এনজিও কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারা কত টাকা পেলো তার স্টেটম্যান্ট দিতে হবে। একই সঙ্গে কত টাকা রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যয় করে, আর কত টাকা বিতরণের সময় কর্তকর্তাদের ব্যয় কত, সে হিসাব দিতে হবে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য কত টাকা আসলো সেটা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় দেখি। সেখানে একজন রোহিঙ্গা ১২ ডলার করে পায়। এরপর কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা বাদে কিছু খরচ করে কি না। কারণ অভিযোগ আসছে, সেটা তদন্ত করার জন্য এটা লাগবে। অভিযোগ আছে তারা উগ্রবাদিদের অর্থায়ন করে। সেটা পরিষ্কার হওয়ার জন্য এটা লাগবে। আইনানুগভাবে যেটা সম্ভব তাদের হিসাবপত্র জানতে চাওয়া।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলোর টাকা-পয়সার হিসাব নেওয়ার ইউদ্যোগ আগেও নেওয়া হয়েছিল, এখন আবার কেন, নাকি এটা ফলোআপ করা হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যারা ফান্ডিং করে তাদের কাছে হিসাব চাওয়ার এখতিয়ার আমার নেই। সচেতনার জন্য আমরা তাদের জানিয়েছি, যেসব টাকা দেওয়া হয় তার সঠিক ব্যবহার হলে সবাই উপকৃত হবে।

‘যে ফান্ড আসে সেটা ১২ লাখ দিয়ে ভাগ দিলে বের হয়ে আসে। এর মধ্য থেকে ২৫ শতাংশ তাদের (এনজিওগুলোর) বিভিন্ন ব্যয় রয়েছে সেটা বাদ দেন, তাহলে তো মূল কত টাকা দেওয়া হচ্ছে সেটা বেরিয়ে যাবে। বাকি ৭৫ শতাংশ টাকা রোহিঙ্গাদের কাজে ব্যয় হয় কি না সেটা তদন্ত করে দেখার জন্য হিসাব চাওয়া হয়েছে।’ যোগ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, দেশে এখন আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক আছে। এজন্য আমরা সন্তোষ প্রকাশ করেছি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আত্মরক্ষার জন্য মারমুখী হয়ে থাকবে বলে আমাদের জানিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে আমরা বলেছি এগুলোর প্রমাণসহ জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। এ বিষয়ে তাদের সচেতন করে দেওয়া হয়েছে। তারা যাতে এমন কোনো কিছু না করে যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।

রমজান মাস আসন্ন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে আমরা খুব সচেতন। একই সঙ্গে খাদ্যে ভেজাল রোধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যাতে অভাব না ঘটে এবং সরবরাহ যেন প্রচুর পরিমাণে থাকে সে বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। পণ্যের দাম যেন ঠিক থাকে ও সরবরাহও যেন স্বাভাবিক থাকে সরকার সে বিষয়ে প্রস্তুতিও নিচ্ছে।

তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সুন্দরভাবে পালন করা হয়। এখানে রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচার অনুসারে বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য সেফটি-সিকিউরিটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য কমিশনারকে (ডিএমপি কমিশনার) বলা হয়েছে। তারা যাতে সুন্দরভাবে শহীদবেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। এসময় যেন অতিরিক্ত ভিড় না হয়।

কিছুদিন আগে জাতিসংঘ সরকারকে বলেছে, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে কাজগুলো করছে সেগুলো তদন্ত করে দেখার জন্য- এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ইউএন কী বললো সেটার ওপর তো বাংলাদেশ চলবে না। আমরা পরমুখাপেক্ষী হই কেন? আমরা নিজেরা প্রমাণ করি না কেন?

আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়-এর আরও খবর