সমঝোতায় না গিয়ে আন্দোলনে নজর দিতে অনুরোধ বিএনপি নেতাদের

  বিশেষ প্রতিনিধি    01-03-2023    185
সমঝোতায় না গিয়ে আন্দোলনে নজর দিতে অনুরোধ বিএনপি নেতাদের

সরকারের দুর্নীতির কবলে বাংলাদেশ নিমজ্জিত মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন, মামলা, গ্রেপ্তার অব্যাহত। এই ভয়াবহ সরকারের হাত থেকে দেশ এবং দেশের মানুষকে বাঁচাতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করে আন্দোলনকে বেগবানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’

গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সিলেট ও খুলনা (আংশিক) বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধের নিয়ে মতবিনিময় সভা হয়। সভার শুরুতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।

সভায় ভার্চুয়ালি লন্ডন থেকে যুক্ত হয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবার মতামত শোনেন। এতে মোট ১৭৫ জন জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ২৬ জন বক্তব্য দেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আরও ৫ জন নেতা বক্তব্য রাখেন বলে জানা গেছে। তবে পরিচিতি পর্বে অনেকে পরিচয়ের পাশাপাশি বক্তব্য দেন।

এ সময় সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারসহ ১০ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দিতে কৌশল ঠিক করতে আহ্বান জানান খুলনা বিভাগের একাংশ ও সিলেট বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি সমর্থিত সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিরা।

জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বেশিরভাগ বর্তমানে দেশের সঙ্কটে বিএনপিকে চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি বিগত দিনে দলের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তারা বলেন, ওই সময়ে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ঐক্য গড়ে দল ভুল করেছিল। কামাল হোসেনের প্ররোচনায় এবং সরকারের মিথ্যা আশ্বাসে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যায় বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো শর্তে বিএনপি নির্বাচনে গেছে তা আজও জানা যায়নি। আগামীতে এরকমভাবে প্রলোভন কিংবা মিথ্যা আশ্বাসে নির্বাচনে গেলে তৃণমূলের মনোবল একেবারে ভেঙে পড়বে। তারা বিপদে পড়বেন। অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বেন বলেও মতামত দেন তারা।

সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের দিকে বিএনপিকে জোরালোভাবে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে নেতারা বলেন, আন্দোলনের পাশাপাশি সংগঠনকেও শক্তিশালী করতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে কোন্দল নিরসন করতে হবে। সমন্বিতভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলে সফল আন্দোলন হবে না। মাঝপথে আন্দোলন থেকে সরে আসলে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিপদে পড়বেন। শুধু বাড়ি-ঘর নয়, এলাকাছাড়া হতে হবে। তাই সংলাপ বা সমঝোতার দিকে না গিয়ে এক দফার আন্দোলনের দিকে নজর দিতে দলের হাইকমান্ডকে অনুরোধ জানান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, ড. এনামুল হক চৌধুরী, সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ বিভাগের জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রংপুর বিভাগের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি সমর্থিত সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় শুরু করে তারেক রহমান। ২৭ ফেব্রুয়ারি খুলনা বিভাগের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। আজ বরিশাল বিভাগ, ২ মার্চ ঢাকা বিভাগে, ৫ মার্চ ফরিদপুর ও কুমিল্লা বিভাগ, ১৩ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগ, ১৪ মার্চ চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগ এবং ১৫ মার্চ রাজশাহী বিভাগ এবং ১৬ মার্চ ময়মনসিংহ বিভাগের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তারেক রহমান।

জাতীয়-এর আরও খবর