আ. লীগের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া হবে বৈধতা দেওয়া

  বিশেষ প্রতিনিধি    03-03-2023    206
আ. লীগের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া হবে বৈধতা দেওয়া

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনভাবেই নির্বাচনে না যেতে বিএনপিকে অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা বিভাগের দল সমর্থিত সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিরা। আন্দোলনের পাশাপাশি কূটনৈতিকসহ অন্যান্য সেক্টরে দলকে আরো বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

এসব জনপ্রতিনিধি বলেন, দেশের প্রত্যেক স্তরের নির্বাচনই এখন নষ্ট হয়ে গেছে। জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ এমনকি মাদ্রাসার প্রতিনিধি নির্বাচনকেও আওয়ামী লীগ সরকার শেষ করে দিয়েছে। সেখানে জোরদবস্তি, দিনের ভোট রাতে দেওয়া শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি না হলে শুধুমাত্র বৈধতা দেওয়া। এমন নির্বাচনে না যেতে মতামত দেন এসব জনপ্রতিনিধিরা।

বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া তিন টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা বিভাগের দল সমর্থিত সাবেক ও বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সাথে মত বিনিময়কালে তারা এ মতামত তুলে ধরেন। সেখানে উপস্থিত সাবেক ও বর্তমান ২১৫ জন চেয়ারম্যানের মধ্যে ৪০ জন বক্তব্য রাখেন।

সভার শুরুতে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান উপস্থিত চেয়ারম্যানদের উদ্দেশ করে বলেন, তাদের চলমান কর্মসূচি কোন পর্যায়ে নিয়ে গেলে বর্তমান সরকারের অবসান ঘটাতে পারব সেই বিষয়ে মতামত তুলে ধরবেন। তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলে এ বিজয় সম্ভব। এজন্য আপনাদের যার যেখানে যেটুকু সক্ষমতা আছে তা প্রয়োগ করুন। সকল বিভেদ ভুলে এক কাতারে আসতে হবে। তাহলেই দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।

জনপ্রধিদের মধ্যে দেওয়া বক্তব্যে সবার মধ্যেই এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়টি যেমন ছিল তেমনি দলকে ঐক্যবদ্ধ করার বিষয়কেও প্রাধান্য দেন তারা। তারা বলেন, এখন সময় দলকে ঐক্যবদ্ধ করে, সব কোন্দল মিটিয়ে একসাথে রাজপথে নামার। এজন্য দলের হাইকমান্ড থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হবে তা তারা দ্বিধাহীনভাবে পালন করবেন।

গাজীপুর জেলার কয়েকজন বলেন, এখন দেশকে বাঁচানোটাই তাদের কাছে প্রধান টার্গেট। আর এরজন্য এই সরকারকে আগে বিদায় করতে হবে। তা নাহলে বিএনপি নেতাকর্মীদের কেউ বাঁচতে পারবেন না। বিএনপি নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি জনগণ যেমন কষ্টে পড়বে তেমনি তৃণমূল পর্যায়ে অনেক আওয়ামী লীগ সমর্থক-কর্মীরাও বিপদে পড়বেন। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যেও অনেকে এখন আর এই সরকারকে দেখতে চায় না। তাদের সংসার চালানোটাও এখন কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এরকম একটা পরিস্থিতিতে চলমান আন্দোলনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে এক দফায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

টাঙ্গাইলের একজন বলেন, আন্দোলনের পাশাপাশি কূটনৈতিকসহ অন্যান্য সেক্টরে দলকে আরো বেশি করে কাজ করতে হবে। দলে কাজ করার জন্য একটা পরিচয় নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দলে মূল্যায়ন করা হলে তাদের মতো আরো অনেক জনপ্রতিনিধি কাজ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবেন। নরসিংদী জেলার একজন জানান, জেলার কোন্দলকে দ্রুত নিরাসন করা দরকার। দলের হাইকমান্ডকে এ দায়িত্ব নিতে হবে।

মতবিনিময় সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, এডভোকেট আহমেদ আজম খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু। সঞ্চালনায় ছিলেন বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু। ঢাকা বিভাগের সাবেক ও বর্তমান ২১৫ জন চেয়ারম্যান ছাড়াও জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়-এর আরও খবর