কক্সবাজারে শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস উদযাপন

  বিশেষ প্রতিনিধি    08-03-2023    212
কক্সবাজারে শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস উদযাপন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কক্সবাজারে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস উদযাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সরকারি—বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা। সকাল ৮টায় অরুণোদয় স্কুল প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, সিভিল সার্জন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

সকাল ১০টায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে আলোচনা সভা করে জেলা আওয়ামী লীগ। এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, সাবেক সাংসদ অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন, রেজাউল করিম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলামসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘এই দিনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে লাখো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমাবেশে ছন্দময় শব্দের ঝংকারে ১৮ মিনিটের যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তা ছিল মূলত বাঙালি জাতির আবেগ, স্বপ্ন ও আশা—আকাঙ্ক্ষার এক মহাকাব্য।

শব্দ চয়ন থেকে শুরু করে যার প্রতিটি শব্দ উচ্চারণে ছিল বঙ্গবন্ধুর অসীম সাহস, সীমাহীন ত্যাগ, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা আর হৃদয় উৎসারিত তেজস্বিতা ও সম্মোহনী ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের এ ভাষণ তাঁর গভীর জীবনবোধের পাশাপাশি জাতীয়তাবাদী চেতনা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার দর্শন ও কূটনৈতিক বুদ্ধির স্বাক্ষর বহন করে। তাই এই ভাষণ শুধু বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলনের দলিল নয়, বাঙালির মুক্তির চেতনারও প্রতীক।’

বিকালে পাবলিক লাইব্রেরীর শহীদ সুভাষ হলে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে সভায় সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা আহমেদ, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ সোমেশ্বর চক্রবর্তী ও কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু তাহেরসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

এতে বক্তারা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একাত্তরের ৭ মার্চ দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণ পরবর্তীসময়ে স্বাধীনতার সংগ্রামের বীজমন্ত্রে রূপ নেয়। এ ভাষণ শুধু রাজনৈতিক দলিলই নয়, জাতির সাংস্কৃতিক পরিচয় বিধানের একটি সম্ভাবনাও তৈরি করে।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিকবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো।

এছাড়াও এ ভাষণটি পৃথিবীর অনেক ভাষায় অনুদিত হয়েছে। এই ভাষণ বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের প্রেরণার উৎস। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ তরুণ প্রজন্মকে দেশপ্রেমের জাগরণে উদ্বুদ্ধ করে আগামীর উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে। ’

পরে দিবসের তাৎপর্য্য উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তথ্যচিত্র, চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী করা হয়।

সারাদেশ-এর আরও খবর