আওয়ামী লীগে একক প্রার্থী, বিভক্তি বিএনপিতে

  বিশেষ প্রতিনিধি    12-04-2023    162
আওয়ামী লীগে একক প্রার্থী, বিভক্তি বিএনপিতে

এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ মনোনীত বীর বাহাদুর উশৈসিং। তিনি এ আসন থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী নির্বাচনেও বীর বাহাদুর বান্দরবান আসন থেকে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। দৃশ্যত এ আসনে আওয়ামী লীগের অন্য কেউ মনোনয়নপ্রত্যাশী নেই।

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইসলাম বেবী জানান, বিগত দিনেও দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সবার ঐকমত্য ছিল। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটার কোনো কারণ নেই। তিনি বিভিন্ন সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অবহেলিত বান্দরবানকে দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় জেলা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। আমরা আশা করছি এবারও বিপুল ভোটে তিনি বিজয়ী হবেন।

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকাকালে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কৃত হন প্রসন্নকান্তি তঞ্চঙ্গ্যা। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছি অনেক আগেই। তাই নির্বাচন নিয়ে আমার কোনো ভাবনা নেই।’

এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হচ্ছেন মিসেস মাম্যাচিং ও সাচিং প্রু জেরী। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বহুল আলোচিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়া আর কোনো নির্বাচনে এ আসন থেকে বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করতে পারেননি।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আওয়ামী লীগের সামর্থ্যরে চেয়ে দলের অভ্যন্তরে বিভাজনই বিএনপির পরাজয়ের বড় কারণ। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য মিসেস মাম্যাচিং নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির একটি গ্রুপের। অন্যদিকে স্বল্প মেয়াদকাল স্থায়ী ষষ্ঠ সংসদে বান্দরবান আসনের সংসদ সদস্য সাচিং প্রু জেরী নেতৃত্ব দিচ্ছেন অন্য একটি গ্রুপের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচনে সাচিং প্রু মনোনয়ন পেলে মাম্যাচিং ভিতরে ভিতরে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সহযোগিতা করেন। একই অবস্থা ঘটে মাম্যাচিং মনোনয়ন পেলেও। এ নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হলেও অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংয়ের অবসান হচ্ছে না।

এবারের বান্দরবান আসনে বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন- জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিগত দিনে সরকারবিরোধী আন্দোলনে মাঠে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিসেস মাম্যাচিং। আমরা আশা করছি দল তাকেই মনোনয়ন দেবে। তবে সাচিং প্রু জেরী মনোনয়ন পেলেও আমরা সবাই তার পক্ষে কাজ করব।’

২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে বদরুল হক চৌধুরী বান্দরবান আসনে নির্বচন করেন। এরপর এ আসনে জাতীয় পার্টির কেউ নির্বাচনে অংশ নেননি। এবারও তাদের কোনো প্রার্থী থাকার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষেও এ আসনে এবার কোনো প্রার্থীকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) মূল গ্রুপের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানান, সরকারের দেওয়া অসংখ্য মামলা এবং অজানা মামলায় গ্রেফতার এড়াতে দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মী পলাতক জীবন যাপন করছেন। কাজেই তাদের পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। অন্য আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর জেলা সভাপতি ছোটনকান্তি তঞ্চঙ্গ্যা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, তাদের পক্ষ থেকেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে না।

সারাদেশ-এর আরও খবর