তুমব্রু সীমান্তের ২ হাজার ৮৮৯ রোহিঙ্গাকে রবিবার থেকে কুতুপালং ক্যাম্পে স্থানান্তর শুরু

  বিশেষ প্রতিনিধি    05-02-2023    221
তুমব্রু সীমান্তের ২ হাজার ৮৮৯ রোহিঙ্গাকে রবিবার থেকে কুতুপালং ক্যাম্পে স্থানান্তর শুরু

কক্সবাজারের উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার ক্যাম্প থেকে বের হয়ে যাওয়া ২ হাজার ৮৮৯ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে ট্রানজিট ক্যাম্পে স্থানান্তরিত করার কার্যক্রম রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে।

এর সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, ‘সীমান্ত পরিস্থিতিতে শূন্যরেখার ক্যাম্প থেকে বের হয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের রবিবার সকাল ৮টায় ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ হতে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের নিজস্ব যানবহন করে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে ।

তবে শনিবার ৩৫ পরিবারের ১৮০ জন সদস্যকে কক্সবাজার উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গ্যা শিবিরে স্থানান্তর করার জন্য নাম চুরান্ত করেছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

টাস্কফোর্স কমিটি সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ১৮ জানুয়ারি তুমব্রু সীমান্তে সংঘর্ষ পরিস্থিতিতে ক্যাম্পের পাশে বাজারে ও স্কুল প্রাঙ্গণে ২ হাজার ৮৮৯ জন রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। গত ২৯ জানুয়ারি সকাল ১১টায় তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রোহিঙ্গ্যা নাগরিকদের ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রম শুরু হয়।

আর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে একটি জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি গঠিত হয়। এতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা আছেন।’কমিটি ইতোমধ্যে ওই ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের অন্যত্র নিয়ে যাতে কাজ শুরু করেছে।

উল্লেখ্য গত ১৮ জানুয়ারি তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখা কোনারপাড়া আশ্রয়শিবিরে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান স্যালভেশন আর্মি’র (আরসা) সঙ্গে মিয়ানমারের আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন’-এর (আরএসও) মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ওই দিনের গোলাগুলিতে দুইজন রোহিঙ্গা নিহত ও নারী-শিশু আহত হয়।

এ ঘটনার পর শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরে ৬৩০টির বেশি ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই শিবিরে থাকা ৪ হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা গৃহহীন হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আশ্রয় নেয়। ইতিমধ্যে বেশ কিছু রোহিঙ্গা তুমব্রু থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের দিকে পাড়ি দিয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দাদের ধারণা, বর্তমানে তুমব্রু এলাকায় দুই হাজারের মতো রোহিঙ্গা আছে।

বর্তমানে কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর কয়েক মাসে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসে ৮ লাখ রোহিঙ্গা। ওই সময় স্থলপথে ৬ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে শূন্যরেখায় আশ্রয়শিবির গড়ে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরে ছিল ৬২১টি পরিবারের ৪ হাজার ৩০০ জন রোহিঙ্গা।

সারাদেশ-এর আরও খবর